শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Bhorer Bani
শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » নদ-নদী » নদী দখল ও দূষণ রোধে আইন হচ্ছে
প্রথম পাতা » নদ-নদী » নদী দখল ও দূষণ রোধে আইন হচ্ছে
৭৫৩ বার পঠিত
শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নদী দখল ও দূষণ রোধে আইন হচ্ছে

---

বিশেষ ডেস্ক : নদী দখল ও দূষণ রোধে আইন আরও কঠোর হচ্ছে। একইসঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ক্ষমতা। সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে আসছে ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন’। খসড়া আইনে নদী সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য ‘নদী রক্ষা কোর্ট’ গঠনের বিধানও রাখা হয়েছে। আইনের প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ব্যর্থ হলে কমিশনের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। কমিশন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এমনকি ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় ব্যবস্থা নিতে পারবে। ইতোমধ্যে আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এখন চলছে মতামত গ্রহণের পালা। চলতি মাসেই আইনটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাওয়ার কথা।

বর্তমান নদী রক্ষা কমিশন আইনটি ২০১৩ সালে প্রণীত। বিদ্যমান আইনে এই ধরনের অপরাধের জন্য কোন শাস্তি নির্ধারিত ছিল না। নদী দূষণ ও দখল রোধে সুপারিশ করা ছাড়া নদী রক্ষা কমিশনের কোন কাজ নেই। নতুন আইন অনুযায়ী, কমিশন নদী দখল ও দূষণ রোধ এবং নদীর উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেবে। সংস্থাগুলো এই নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবে। সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। খসড়া আইনে নদী সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য ‘নদী রক্ষা কোর্ট’ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। দখলদার যত প্রভাবশালী হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা খসড়া এই আইনে বলা হয়েছে।

খসড়া আইনে, ১৪টি অধ্যায়ে ধারা রয়েছে ১০৮টি। এছাড়া শাস্তি সংক্রান্ত তিনটি তফসিল রয়েছে। বর্তমান আইনে চারটি অধ্যায়ে ২১টি ধারা রয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান আইনে কমিশনের ১৩টি কার্যাবলীর কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, নদীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ-পরিবীক্ষণ করে আমরা সুপারিশ করব। উন্নয়ন করতে হলে সুপারিশ করতে হবে। ইতোমধ্যে আদালত দুটি আদেশ দিয়েছেন- তারা আমাদের ইতোমধ্যে নদীর অভিভাবক নির্ধারণ করে দিয়েছেন। উন্নয়নসহ নদী রক্ষায় কমিশন সব কাজ করতে বাধ্য বলেও আদালত আদেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশই চূড়ান্ত, আইনে না থাকলেও আইনের মতোই গণ্য করতে হবে।

তিনি বলেন, আদালত দেখেছেন আমরা গত কয়েক বছরে নদী রক্ষায় যেসব সুপারিশ দিয়েছি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো তা ফেলে রেখেছে, তারা কোন কাজ করেনি। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি নদী রক্ষা কমিশন আইনে না থাকলেও অন্যান্য আইনে নদীর দখল-দূষণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। সেটা না নেয়ায় নদী দখল ও দূষণ বন্ধ হচ্ছে না। আমরা মাঠে গিয়ে তাদের (সংশ্লিষ্ট সংস্থা) সঙ্গে নিয়ে কিছু কাজ করাতে পেরেছি। এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৫৮ হাজার নদী দখলদার ও দূষণকারীর তালিকা প্রকাশ করেছি। এরমধ্যে ১৯ হাজারের মতো দখলদার উচ্ছেদ করেছি। আমরা ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে এই কাজগুলো করেছি, কিন্তু আইনে তো সেটা নেই। আইনের বলে আমরা সেটা করতে পারছি না।

সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাহী ক্ষমতা পুরোটা আমরা ব্যবহার করব, আমরা এটা চাই না। আমরা কারও ক্ষমতা নিতেও চাইছি না। আমরা চাইছি যে, নদীর দখল-দূষণ রোধে সংস্থাগুলোকে যেমন-বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদফতর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনসহ অন্যদের যে ক্ষমতা দেয়া আছে সেটার ব্যবহার তারা করুক। যদি সেটা তারা না করে তবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে কমিশনের কাছে। তাদের যুক্তি গ্রহণযোগ্য না হলে তখন আমরা আমাদের ক্ষমতা ব্যবহার করব, কারণ নদীকে তো রক্ষা করতেই হবে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে দেব। নদী রক্ষায় কমিশনকে সংস্থাগুলো যে কোন সহযোগিতা দিতে বাধ্য থাকবে। এসব বিষয়ই আইনের খসড়ায় থাকছে।

বর্তমান কমিশন আইনে নদী দখল ও দূষণকারীদের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট শাস্তির কথা নেই জানিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দণ্ডবিধিতে নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার শাস্তির কথা আছে। পরিবেশ আইনেও নদী দখল-দূষণের বিষয়ে শাস্তির বিধান আছে। পানি আইনেও নদী সংক্রান্ত অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু নদীর ক্ষেত্রে এই আইনগুলোর বাস্তবায়ন তারা করেনি। নদী দখল ও দূষণের জন্য কাউকে কারাদণ্ড পেতে হয়নি। শুধু কিছু জরিমানা করা হয়েছে। নতুন কমিশন আইনে ওই আইনগুলোর শাস্তির বিষয়গুলো উল্লেখ করা থাকবে। একইসঙ্গে নদী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। আইনের প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে কমিশনের কাছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এমনকি ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায়ও ব্যবস্থা নেয়া যাবে। কমিশন এই ব্যবস্থা নিতে পারবে।

নতুন আইনে ‘সরকার’ বলতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে বোঝাবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করব। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোন কাজ থাকবে না। নতুন আইনে নদী রক্ষা কোর্ট করার বিধান রয়েছে। বিদ্যমান কোর্টেও বিচার চলবে, মোবাইল কোর্টও থাকবে। এতে মামলা নিষ্পত্তিতে গতি আসবে। তিনি আরও বলেন, নতুন আইনটি আমরা এই মাসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে চাই। আমরা এখন খসড়ার বিষয়ে সবার মতামত নিচ্ছি।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান ও কমপক্ষে দুইজন নারী সদস্যসহ সর্বোচ্চ সাত সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রত্যেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের জন্য নিয়োগ পাবেন, তবে বয়স ৭০ বছর হলে অবসরে যেতে হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও তিন সদস্য পূর্ণকালীন সময়ের জন্য কর্মরত থাকবেন এবং অন্য তিন সদস্য সাম্মানিক ও খণ্ডকালীন হবেন। বর্তমানে একজন নারী সদস্যসহ কমিশন পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ তিন বছর।

খসড়া নদী রক্ষা কমিশন আইনে বলা হয়েছে, কমিশন নদীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, অধিদফতর ও সংস্থা এবং বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির কার্যাবলী সমন্বয় করবে। কমিশন আবশ্যক বিবেচিত যে কোন পরামর্শ এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য পাঠাবে, যা যৌক্তিক কিংবা আইনগত কোন কারণ ছাড়া সংশ্লিষ্টরা বাস্তবায়ন করতে বাধ্য থাকবে এবং বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনের মাধ্যমে কমিশনকে জানাবে।

এতে বলা হয়, কমিশন নদী সংশ্লিষ্ট অন্য কোন আইন প্রয়োগে নদীর অবৈধ দখলমুক্ত করা এবং পুনর্দখল রোধে এবং উচ্ছেদ ও উদ্ধারে জেলা প্রশাসক ও কালেক্টরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, পরামর্শ বা সুপারিশ দেবে। যা তাদের আবশ্যই পালন করতে হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে গুরুত্ব বিবেচনায় উচ্ছেদ ও নদ-নদীর ভূমি উদ্ধারে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে অভিযানে নেতৃত্ব দিতে পারবে কমিশন।

নদীর মধ্যে কিংবা তীরভূমিতে বা নদীর বর্ধিত ভূমিতে ও নদীর নির্ধারিত প্লাবন ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা বা কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধ এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনে কমিশন কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। কিংবা সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেবে।

কমিশন দেশের নদী রক্ষায় মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে এবং এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা নেবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে অর্থায়নের সুপারিশ বা প্রস্তাব করবে বলে খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের মধ্যে ও দেশের মধ্য দিয়ে প্রবহমান সব নদী আইনী ব্যক্তি ও জীবন্ত সত্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণা : খসড়ায় আরও বলা হয়, নদ-নদীর অবৈধ দখল, দূষণ, নাব্য কমানো, পানি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্যসহ বহুমাত্রিক ব্যবহার বিঘ্নিত বা সঙ্কটাপন্ন হয় বা হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে কমিশন নদী ও নদী সংলগ্ন এলাকাকে পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করতে পারবে।

ভী-বানী/ডেস্ক



আর্কাইভ

কমলনগরে বহিরাগত যুবক দিয়ে অস্ত্রোপচার, স্বামী-সন্তান নিয়ে আড্ডায় মগ্ন ডা. ফাতেমাতুজ যাহরা
বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না-এমপি নজরুল ইসলাম বাবু
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদের মোশারেফ
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে দু’জনের মনোনয়ন বাতিল
কমলনগরে ডেঙ্গু জ্বর মানে-ই হঠাৎ আতংক
লক্ষ্মীপুরে তৃণমুলে আলোচনায় যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ভুলু
কমলনগরে বিএনপি’র অফিস ভাঙচুর
কমলনগরে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা, বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ র্যালী
জামালপুরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আ’লীগে মতবিনিময় সভা
জামালপুরে যুবলীগের তারুণ্যর জয়যাত্রা সমাবেশের প্রস্তুতি সভা
সরিষাবাড়ীতে জনতার সাথে মতবিনিময় করেন প্রকৌশলী মাহবুব হেলাল
ঈদের শুভেচ্ছা জানান ভাইস চেয়ারম্যান শিলা
ঈদের শুভেচ্ছায় আ’লীগ নেতা সাজু
“ডেইলি ভোরের বাণী” পরিবারে ঈদুল আজহা’র শুভেচ্ছা
কমলনগরে স্মার্ট ভূমিসেবায় চালু হয়েছে গ্রাহক সেবা