শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ন ১৪৩২

Bhorer Bani
শনিবার, ২০ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » জীবন চিত্র | ফিচার » নারীরা ইচ্ছে মতো স্বামী নির্বাচন ও পরিবর্তন করতে পারে!
প্রথম পাতা » জীবন চিত্র | ফিচার » নারীরা ইচ্ছে মতো স্বামী নির্বাচন ও পরিবর্তন করতে পারে!
৮৭৪ বার পঠিত
শনিবার, ২০ মার্চ ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নারীরা ইচ্ছে মতো স্বামী নির্বাচন ও পরিবর্তন করতে পারে!

 ---

প্রকৃতির মতোই যেন সুন্দর তাদের মুখগুলো। পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এক জাতির কথা বলছি। একেবারেই দুর্গম অঞ্চলে তাদের বসবাস। তবে সেখানকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দেখলে যে কাউকে মুগ্ধ হতে হবে। হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণির নাম শুনেছেন কখনো? ওই পর্বতশ্রেণির দুর্গম এক এলাকার মধ্যে দিয়েই বয়ে চলেছে কুনার নদী।

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ। সেই প্রদেশেই আছে হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণি। যাকে গ্রীকরা বলতেনককেশাস ইণ্ডিকাস। সেই হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণির দুর্গম এলাকাটিই পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। এজন্যই সেখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্য আজো এক অজানা রহস্যের মোড়কে আবৃত।

হিন্দুকুশের ঘন সবুজ বন, পাহাড়ি উপত্যকা দিয়ে গড়িয়ে পড়া ঝর্নার পানির শব্দ ও পাখিদের কোলাহল ওই এলাকাটিকে অন্যন্য করে তুলেছে। সেই সঙ্গে চারপাশে থাকা প্রাচীন ওয়াল নাট, অ্যাপ্রিকট, ওক, পাইন, ফার, উইলো গাছের ভীড় চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। আরো রয়েছে চারপাশে বাহারি ফুলের মেলা, তাদের শোভা ছড়িয়ে পড়ছে এলাকা জুড়ে। ঠিক যেন এক কল্পনার রাজ্য।

এমনই এক স্বপ্নের পরিবেশে বাস করে এক স্বাধীনচেতা প্রাচীন শেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী। তাদের চুলের রং সোনালি, চোখের মনি নীল। এই মানুষদের সৌন্দর্য যেন একেবারেই আলাদা। পাকিস্তানের আর কোনো গোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে তাদের চেহারা, ধর্ম, সংস্কৃতি, সমাজব্যবস্থা ও খাদ্যাভাসের বিন্দুমাত্র মিল নেই। এই স্বাধীনচেতা গোষ্ঠি হলো কালাশ। তবে এটা স্পষ্ট যে কালাশরা অন্যন্ত কষ্টে হলেও নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছেন। যদিও তারা সংখ্যায় মাত্র চার হাজার জন।

আসলেই কি তারা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর?

কালাশের মানুষেরা পাকিস্তানের শাসন মানে না। তারা নিজেদেরকে কালাশ উপজাতি গ্রীক বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সৈন্যসামন্তের বংশধর বলে মনে করেন। তারা জানেন মরলে লড়াই করেই মরতে হয়, কারও অধীনে থেকে নয়। আর এজন্যই পাকিস্তানও এদেরকে স্বাধীনভাবে থাকতে দিয়েছে। আর এই কালাশ উপজাতিরাও বিচ্ছিন্ন এক দুর্গম অঞ্চলে মনের সুখেই বসবাস করছে। তারাও আধুনিক দুনিয়ার বিষয়াদি নিয়ে মাথা ঘামায় না।

কালাশ জাতির আদি নিবাস

কালাশদের মতে, তাদের পূর্বপুরুষরা গ্রীস থেকে এসেছিলেন। ইতিহাসেও তার অনেকটাই প্রমাণ মিলেছে। ইতিহাসবিদদের মতে, কালাশরা এখন যেখানে বসবাস করেন, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট সেই উত্তর পাকিস্তানের পাহাড়ি এলাকা জয় করেছিলেন দুই হাজার বছর আগে। কালাশ জনগোষ্ঠীর মানুষরাও এখানে বাস করছেন প্রায় দু’হাজার বছর ধরেই।

‘কালাশ’ ভাষায় কথা বলেন কালাশ উপজাতির মানুষেরা। এর পাশাপাশি আরবি বা উর্দুর কোনো মিল নেই। কালাশরা বলেন, ইসলামেরও আগে সিকান্দার-ই-আজম (আলেকজান্ডার) ভারতে আসেন। যুদ্ধ জয়ের পর তিনি যখন গ্রিসে ফিরে যান, তার কিছু সঙ্গীরা এখানেই থেকে যান।

হিন্দুকুশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য তাদের মনে ধরে, এজন্য এখানে বসতি স্থাপন করেন তারা। তাদের নেতা ছিলেন আলেকজান্ডারের এক সেনাপতি শালাখাশ সেলুকাস! তিনি কিছু সৈন্যসামন্ত নিয়ে পাহাড়ি উপত্যকায় বসবাস শুরু করেন। স্থানীয় নারীদের বিবাহ করেন। হিন্দুকুশের কাফের কালাশরা তাদেরই বংশধর।

কালাশদের জীবনযাপন

এক প্রাচীন জনগোষ্ঠী কালাশ। হিন্দুকুশের ভয়ঙ্কর পাহাড়ি ঢালে কালাশদের অতি সাধারণ বাড়িঘর। তারা পৌত্তলিক, নানা দেব-দেবীর পূজা করেন। সেখানকার নারীরাও স্বাধীনচেতা। নিজেরাই নিজেদের স্বামী বেছে নিতে পারেন। পুরুষতন্ত্রের কোনো হুঙ্কার নেই কালাশ গ্রামগুলোতে। কালাশ গ্রামে নারী-পুরুষের সমান অধিকার।

কালাশ নারীদের স্বামী নির্বাচনের স্বাধীনতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে স্বামী পরিবর্তন করার ক্ষমতাও। তবে আগের স্বামী নারীটিকে যা দিয়েছেন, তার দ্বিগুণ দ্বিতীয় স্বামীকে দিতে হবে। আগের স্বামী একটি গরু দিলে, দ্বিতীয় স্বামীকে দুটি গরু দিতে হবে।

স্ত্রী ছিনতাইকে কালাশরা অপরাধ ভাবেন না। এক গ্রামের কালাশ বধূকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় অন্য গ্রামের কালাশ পুরুষ( উভয়ের সম্মতিতেই)। একে ঘোনা দস্তুর বলা হয়। কালাশদের বিভিন্ন উৎসবে এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক সময় এই ছিনতাই-এর ঘটনার কারণে গ্রামে গ্রামে লড়াই লেগে যায়। তখন দুই গ্রামের মাথারা মীমাংসা করে দেন।

কালাশদের জীবন রঙিন

কালাশদের জীবনযাত্রার সব কিছুতেই রয়েছে রঙের ছোঁয়া। নিজেদের পোশাক তারা নিজেরাই তৈরি করেন। কালাশ পুরুষরা পরেন উলের শার্ট, প্যান্ট, টুপি। নারীরা এমব্রোয়েডারি করা লম্বা কালো গাউনের মতো পোশাক। কালাশ নারীরা অনেক সময় মুখে ট্যাটুও করেন। বাচ্চারা চুলে বিভিন্ন রঙেন পাথরের পুঁতি পরে। জীবনযাত্রার সব উপকরণ তারা নিজেরাই তৈরি করে নেয়।
কালাশদের রীতি ও সংস্কৃতি

জীবিকা নির্বাহের জন্য কালাশরা পাহাড়ের ঢালে চাষ করেন। নাচ, গান, আমোদ-প্রমোদে ভরপুর জীবন তাদের। শীতের সময় কালাশ নারী পুরুষরা একত্রে বল নিয়ে বরফের উপর চিকিক গাল নামে এক ধরনের খেলা খেলেন। এখানকার অনুষ্ঠানগুলোর একটা বিশেষত্ব রয়েছে। পুরুষরা অনেক সময়েই নারীদের পোশাক পরে নাচেন, আর নারীরা পরেন পুরুষদের পোশাক।

কালাশদের রীতিনীতি খুবই অদ্ভুত। সবে যৌবনে পা দেয়া ছেলেদের গ্রীষ্মকালে ভেড়া নিয়ে উচুঁ পাহাড়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বেঁচে ফিরলে বাদুলাক উৎসব হয়। এই উৎসবে সে এক দিনের জন্য গ্রামের যেকোনো বিবাহিত, অবিবাহিত ও কুমারি নারীর সঙ্গে থাকবে এবং বাধ্যতামূলক ভাবে সঙ্গম করবে। এর জন্য কেউ গর্ভবতী হলে সেটাকে আশীর্বাদ বলে মনে করেন গ্রামের সবাই। নারীরা ঋতুমতী হলে বা সন্তান জন্মের সময় তাদের গ্রামের প্রান্তে বাশালেনি নামে একটা ঘরে থাকতে হয়।

কালাশদের ধর্ম ও উৎসব

সংস্কৃত ভাষাবিদ মিখাইল উইটজেল তার ‘দ্য অরিজিন অব দ্য ওয়ার্ল্ডস মিথলজিস’ বইতে লিখেছেন, কালাশ ধর্মের কিছু প্রবাদ, কিংবদন্তি, আচার ও সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে। তার মনে হয়েছে, কালাশরা প্রাচীন বৈদিক ধর্ম পালন করেন। একই কথা বলেছেন রচেস্টার ইউনিভার্সিটির অ্যানথ্রোপোলজির প্রফেসর বারবারা ওয়েস্ট।

কালাশদের মূল ধর্মীয় উৎসব তিনটি। মে মাসে হয় চিলাম জোশি, শরৎকালে উচাউ, মধ্য শীতে হয় সেরা উৎসব কাউমুস। পাকিস্তান ইসলামে দীক্ষিত হলেও, এই কালাশ মানুষরা তাদের পৌত্তলিকতার সংস্কৃতি মেনে এখনও মন্দিরে প্রাচীন দেবতার পূজা করে। তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব কাউমুস হয় একটি টক গাছকে ঘিরে। গ্রামের সেই জায়গাটার নাম ইন্দ্রাণকোট।

সত্যিই কালাশরা গ্রীক বীর আলেকজান্ডারের সৈন্যদের বংশধর! তাদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন চিহ্ন, সমাজব্যবস্থার ধরন, সংস্কৃতিগত প্রমাণ এবং ডিএনএ রিপোর্টও প্রমাণ করতে চলেছে তারা আলেকজান্ডারের সৈন্যদেরই বংশধর। অ্যারিস্টটল ইউনিভার্সিটির ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক এলিসাভেট মেলা তার সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বলেছেন, কালাশ উপজাতির মানুষ ও প্রাচীন গ্রীকদের কথ্য ভাষার মধ্যে অস্বাভাবিক মিল রয়েছে।

২০১৪ সালে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছিল, কালাশ মানুষদের ডিএনএ বলছে, তারা প্রাচীন ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর বংশোদ্ভূত। কালাশ শিশুদের শরীরে বইছে গ্রীক রক্ত। ২০০৪ সালে প্রকাশিত মাইট্রোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ রিপোর্ট বলছে, এশিয়ার সঙ্গে কালাশ উপজাতির জিনগত কোনো সম্পর্ক নেই, মিল রয়েছে পাশ্চাত্যের ইউরেশিয়ানদের। ২০০৭ সালের ওয়াই-ক্রোমোজোমাল ডিএনএ রিপোর্টও বলছে একই কথা।



উপ-সহকারী ভূমি তহশিলদার’র বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ-
গণ সংযোগে ব্যস্ত বিএনপির প্রার্থী আশরাফ উদদিন নিজান
কমলনগরে পরিত্যক্ত টিনশেট ঘরে ঝু্ঁকিতে চলছে দলিল রেজিস্ট্রি
বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ
মরা খালের ‘প্রাণ’ ফেরানোর দাবি এলাকাবাসীর
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ- কর্মসূচি পালনে বিপাকে ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সানিম
কমলনগরে বহিরাগত যুবক দিয়ে অস্ত্রোপচার, স্বামী-সন্তান নিয়ে আড্ডায় মগ্ন ডা. ফাতেমাতুজ যাহরা
বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না-এমপি নজরুল ইসলাম বাবু
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদের মোশারেফ
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে দু’জনের মনোনয়ন বাতিল
কমলনগরে ডেঙ্গু জ্বর মানে-ই হঠাৎ আতংক
লক্ষ্মীপুরে তৃণমুলে আলোচনায় যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ভুলু
কমলনগরে বিএনপি’র অফিস ভাঙচুর
কমলনগরে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা, বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ র্যালী
জামালপুরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আ’লীগে মতবিনিময় সভা