‘অচেনা গল্পের শুরু’ শেষ কোথায়..!
ফিচার ডেস্ক : ব্যস্ততম শহর রাজধানী’র ফার্মগেট। মানুষ দিনের মধ্যে দেখে মুখ চেনার উপায় নেই। কে কোন পথে বোঝা মুশকিল। দিনের ব্যস্থতায় রাতে যৌনকর্মী’র সংখ্যা বাড়তে থাকে। দিনে অথবা রাতে বোরকা, হিজাব পড়ে অপেক্ষায় থাকে তারা।
মধ্যরাতে সরেজমিনে ফা’র্মগেটে গিয়ে দেখা যায়, খদ্দেরের খোঁজে বোরকা পড়ে এখানে-সেখানে অপেক্ষা করছেন পতিতারা। তাদের পাশেই সারি-সারি সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে। খদ্দের এসে প্রথমে দামা-দামি করে। এরপর চূড়ান্ত হলে নিয়ে যায় সিএনজি করে। তাদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ মানুষকে বিরক্ত করে। তাদের ভুলি ‘নিবি..!’লাগবে’..! বলে বিভিন্ন ইশারা দেয় তারা। এতে অনেক পথচারী এবং স্বনামধন্য মানুষ বিড়ম্বনায় পড়ে।
আইনানুল পথচারী বলেন, ওরা সুযোগ বুঝে ইশারা দেয়, নানান রকম অ’শ্লী’ল কথাও বলে। পরিচয় গোপন রেখে কথা হয় নিশাত নামের একপতিতার সঙ্গে। সদ্য এ পথে পা বাড়িয়েছে। আমি যে এ পেশায় আছি তা পরিবারের কেউই জানে না। টাকার অভাবেই এ পেশাই আসছি। এত পেশা থাকতে এ পেশায় আসলেন কেন..? এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তরই দেননি। আধাঘন্টার জন্য নিয়ে গেলে ৫০০ টাকা, পুরো রাতের জন্য নিয়ে গেলে ১ হাজার টাকা দিতে হয়।
রাতেই ফার্মগেটে আসি। হোটেলে বা খদ্দেরের বাসায় গিয়ে কাজ করি। তবে কষ্ট লাগে যখন ৫ শত টাকার কথা বলে কাজ সেরে ২-৩ শত টাকা দেয়। প্রতিবাদ করে লাভ নেই আরও ক্ষতি হয়। এছাড়াও একজন করবে নিয়ে গিয়ে কয়েকজন কাজ করে। প্রচুর কষ্ট হয় যখন টাকা কম দেয়। কথা বলতে বলতে সামনে গেলে আরও কয়েক জনের সাথে দেখা হয়। বাসা-বাড়ি ছাড়া মাঝে মধ্যে সিএনজিতে কাম সেরে চলে যায়।
পতিতাদের আনাগোনা প্রতিদিন বিকেল, সন্ধ্যা এবং রাতে বৃদ্ধি পায়। কেউ কেউ মধ্যরাতে বের হয়। সারা রাত কাম করি সকাল হলে ঘরে ফিরি। ভ্যান চালক আলী বলেন, প্রতিরাত দেখি মাইরা সাইজাগুইজা দাঁড়াই থাকে। ভোর হলে আবার চইলা যায়। তবে কিছু কিছু মাইয়া সিএনজি চালকও থাকে। খদ্দের ঠিক হইলে সিএনজি দিয়া চইলা যায়। অনেক সময় সিএনজিতে কাম করতে দেখা যায়।
অন্যজনে বলেন, এদের মধ্যে পতিতা প্রতারকও থাকে। অনেক সময় বুইজা উঠার আগে প্রতারণা কইরা চলে যায়। সিএনজি অথবা নির্জন জায়গায় নিয়া টাকা, পয়সা, মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। কিছু বলে না ডরে সম্মান যদি চইলা যায়।
রুপা বলেন, বাড়ি পটুয়াখালী। প্রেম সংকান্ত বিষয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। প্রেমিক প্রতারনা করে। মান-সম্মান হারাবে কারণে এ পথে আসে। এখন আর বের হওয়ার সুযোগ নেই।
ফরিদা বলেন, বিয়ের পর শহরে আসি স্বামীর সাথে। স্বামী তারে রাইখা আরেকটা বিয়া করে। নিরুপায় হয়ে এ পথে আসি।
আলেয়ার গল্পটা ভিন্ন..সে বলেন, স্বামী, সন্তান নিয়া সুখের সংসার। হঠাৎ স্বামী অসুস্থ হলে সংসার চলে না। তাই নিরুপায়, কষ্টের কারণে বেশ্যা গিরি করি। সম্মান হারানোর ভয়ে রাতে কাজ করি।
একজন বলেন, এজীবন আর ভালো লাগে না। মনে হয় মইরা যায়। সন্তান টারে পড়ালেখা করাইতে টাকা লাগে। তার পড়ালেখা ও শহরে থাকার কারণে একাজ করতে হয়। তবে কষ্ট লাগে যখন মানুষ রুপি কিছু লোক কাজ সেরে টাকা না দিয়া চইলা যায়। প্রতিবাদ করলে মারে, অত্যাচার করে। কিছু করার নাই।
সুশীল সমাজ’ সাংবাদিক আমু বলেন, পতিতা বা যৌনকর্মীর চাহিদা চাইলে কমানো যাবে না। পতিতাদের মধ্যে প্রতারক রয়েছে। অনেক সময় পুলিশ অভিযান চালাই। কিন্তু কিছু করা নাই। এদের বিভিন্ন রকম চাহিদা রয়েছে। পতিতারা তাদের চাহিদা মেটাতে মাঝেমধ্যে সাধারণ মানুষ,পথচারিরা বিমুখ হয়। প্রতারিত হয়। বাজে কথা শুনতে হয়। বিভিন্ন রকম বিড়ম্বনার শিকার হয়।
ভী-বাণী /কাল্পনিক