
মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় বিএনপির কর্মী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা, পরিবারের আহত আরও-৪
মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় বিএনপির কর্মী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা, পরিবারের আহত আরও-৪
আমজাদ হোসেন আমু,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ;
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ার বিএনপির কর্মী মো. নুরুল আমিন (৬০) নামের এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এবং একই ঘটনায় নিহত পরিবারের আরও চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে উন্নত চিকিৎসা দিতে মো. নুরুল আমিনকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এছাড়াও আহতদের ২জনকে উন্নত চিকিৎসা দিতে জেলা সদরে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা হলেন, নিহত মো. নুরুল আমিনের ছেলে বজলুর রহমান ভুলু (৩১), মো. মামুন (২৫), মো. ফিরোজ (১৮) ও মেয়ে আছমা আক্তার (২৭)।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান সড়ক এলাকার চৌধুরীর চা দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বজলুর রহমান ভুলু বলেন, স্থানীয় চৌধুরীর চা দোকানের সামনে একটি মাচায় বসে ওই এলাকার আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থন কামাল, জামাল, মাসুদ, আলমগীর, মনির ও সেলিমের সাথে বিভিন্ন এলাকার অপরিচিত লোকজন গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা মাদক সেবন করে । এ নিয়ে দুইদিন আগে বজলুর রহমান ভুলু অপরিচিতদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্তদের সাথে তার কথা কাটাকাটি ও বাকবিতন্ডা হয়। এরই জেরে সোমবার রাতে চৌধুরীর চা দোকানে তার ভাই মামুন চা খেতে গেলে পাওনা টাকার অজুহাতে চা দোকানদার চৌধুরীর সাথে তার ভাই মামুনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয় । কথা কাটাকাটির মধ্যে স্বৈরাচার দলের ক্যাডার, মাদক সেবী কামাল, জামাল, মাসুদ, আলমগীর, মনির ও সেলিম মিলে তার ভাইকে বেদড়ক মারধর করেন। খবর পেয়ে বজুলর রহমান ভুলু, তার পিতা নুরুল আমিন ও বোন আছমা আক্তার এগিয়ে গেলে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করে তারা। এসময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মো.নুরুল আমিন বেদড়ক মারধরে গুরুতর ও মারাক্মত জখম হয়। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে নিহত ঘোষণা করেন।
বজলুর রহমান ভুলু আরও বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমল থেকে এরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে মাদক বিক্রি, সেবন করছে। ৫আগস্টের পর এরা বেপরোয়া হয়ে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন করছে। আমার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আমার পরিবারের উপর সবসময় এদের ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি থাকত। মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। এবং পরিবারের আরও চারজনকে আহত করেছে।
বজলুর রহমান ভুলু স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা সদস্য ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। তার বাবা নিহত মো.নুরুল আমিন দীর্ঘ সময়ে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলরন। তিনি তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন। এসময় বিএনপির কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বাবা নিহতের ঘটনায় বিচার চেয়ে মিছিল করেন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অভিযুক্তদের মেঠোফোনে যোগাযোগ করে তাদের কোন তথ্য বা বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম কাদের বলেন, নিহত মো.নুরুল আমিন ও তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরিকল্পিতভাবে স্বৈরাচারের দোসর, মাদক সেবীরা তাদের উপর হামলা করেছে। হামলায় স্বৈরাচার সরকারের স্থানীয় নেতাদের ইন্ধন রয়েছে মনে করছি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে সেলিম নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।