শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

Bhorer Bani
বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ফিচার » বিলুপ্তির পথে গ্রামাঞ্চলে ‘তাল গাছ’
প্রথম পাতা » ফিচার » বিলুপ্তির পথে গ্রামাঞ্চলে ‘তাল গাছ’
১১৪২ বার পঠিত
বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিলুপ্তির পথে গ্রামাঞ্চলে ‘তাল গাছ’

---

বিশেষ প্রতিবেদন :
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তাল গাছ। গ্রামের সৌন্দর্য্য ধরে রাখত ভিন্নভাবে। নিজেকে মেলে ধরতো নিজস্ব সাঁজে। গ্রামের প্রতিটি স্থানেই দেখা মিলত এ তালগাছের। অথচ এ তাল গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।দেখাই মিলছে না।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি,কমলনগর,রায়পুর,রামগন্জ ও জেলা সদরে বি ভিন্ন গ্রামাঞ্চলের জায়গা ঘুরে এ তালগাছ সম্পর্কে বিশদর জানা যায়।

এ তালগাছ বাংলাদেশ তথা এশিয়া মহাদেশ জুড়ে জনপ্রিয় একটি গাছ। কারণ এর প্রায় সব অঙ্গ থেকেই কিছু না কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরী হয়, কিছুই ফেলা যায় না। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব তালগাছ।

তাল পাতা দিয়ে ঘর ছাওয়া, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকবার পট, লেখবার পুঁথি, পুতুল ইত্যাদি বহুবিধ সামগ্রী তৈরী হয়। এমনকি তালের কাট দিয়ে বাড়ি, নৌকা, হাউস বোট,গ্রামের বাড়িঘর তৈরিতে আড়া ইত্যাদি তৈরি হয়। কিন্তু কালের আবর্তে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের এ তালগাছ। তালের ফল এবং বীজ দুই-ই বাঙালির জন্য সুস্বাধু খাদ্য। তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে গুড়, পাটালি, মিছরি, ইত্যাদি তৈরি করা যায়। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান।

এছাড়াও লোকজ চিকিৎসায় তালের ব্যবহার প্রচুর। কচি গাছ পিত্তাধিক্য, আমাশয়, গনোরিয়া নিরাময় করে। শিকরের রসের মূত্রকারক, কৃমিনাশক গুণ আছে। শিকরের নির্যাস শ্বাসতন্ত্র ও বাকলের নির্যাস দাঁতের সমস্যায় উপকারী। তাল মিছরি ঠান্ডা, সর্দি, মাথাব্যথা, হুপিং কাশি এবং পাকা তালের নির্যাস ত্বকেহ প্রদাহ কমায়। ঠান্ডা দুধ মিছরিসহ খেলে ভাল ঘুম হয়।

তালগাছ যেমন উপকারী তেমন পরিবেশ বান্ধব। এ গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে, জমির উর্বরতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়।

তালগাছ নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “তালগাছ, এক পায়ে দাড়িয়ে, ঊকি মারে আঁকাশে, সব গাছ ছাড়িয়ে,।” রবীন্দ্রনাথ তাল গাছকে একাকী এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ধ্যানী বলে উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাল গাছকে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে, ক্লাসে পড়া না পারা ছাত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আমাদের দেশে পরিবেশ বান্ধব এই তাল গাছ আজ প্রায় বিলুপ্ত। এক সময় সারাবাংলার গ্রামগঞ্জে, প্রায় প্রতিটি ভিটা-বাড়ি থেকে শুরু করে আনাচে কানাচে, রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো তাল গাছের নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পরতো। কালের পরিক্রমায় বাংলার ঐতিহ্যের অংশ তাল গাছের অস্তিত্ব আজ সংকটাপন্ন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাল গাছ আস্তে আস্তে হারিয়ে যাওয়ার কারণে এ প্রজন্ম অনেকটা তাল গাছের বৈশিষ্ট, উপকারিতা ও তাল ফলের স্বাদ ভুলতে বসেছে। কয়েক বছর আগেও বাজারে প্রচুর তাল বিক্রি হতো।

জৈষ্ঠ, আষাঢ় মাসে কাঁচা তাল ফলের শাস খেতে চারিদিকে ডাক পরে যেতো। চলতো শাঁস খাওয়ার প্রতিযোগিতা। কে কতো খেতে পারে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে পাকা তালের মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠতো প্রতিটি পাড়া-মহল্লা। পাকা তালের আটি পিষে হলুদ রস বের করার জন্য শুষে যেত বাড়ির ঝি-বউয়েরা। শ্রাবণ মাসে কলাপাতায় তালের পিঠা তৈরীতে ধুম পরে যেতো। শুধু তালের পিঠাই নয়, তালের রুটি, তালের বড়া ও তালসত্বসহ আরও বাহারী অনেক রকম পিঠা। মেহমানদারীতে সকল পিঠা ছিলো স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়।

তাল গাছের পাতার সঙ্গে সুপরিচিত বাবুই পাখির সুনিপুণভাবে তৈরী পাতার সঙ্গে ঝুলানো বাসা (আশ্রয়স্থল) সকলের পরিচিত। আজকাল হাজার হাজার পাখির কিচির-মিচির ডাক আর মনোরম দৃশ্য চোখে পরে না। তাল গাছ এক বীজপত্রী উদ্ভিদ। শাখা প্রশাখাবিহীন এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যতম দীর্ঘ এই গাছের মাধ্যমে পাড়া, মহল্লা ও বাড়ির পরিচয় পাওয়া যেতো। তাল গাছ ৬০-৭০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর জীবনকাল প্রায় ১০০-১৫০ বছর। গ্রাম বাংলার মাটি তাল গাছের উপযোগী। গ্রাম-গঞ্জে এমনও একটি প্রচলিত কাব্য আছে, ‘শালিস মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার’। এ কথার মাধ্যমে তাল গাছের গুরুত্ব ও দীর্ঘতাকেই বুঝানো হয়েছে।

জনশ্রুতি আছে যে, তাল গাছের মতও বড় বড় গাছে বজ্রপাত হতো। ফলে মাঠ-ঘাটে প্রাণিকূলের জীবন রক্ষা পেতো। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতি হয়ে উঠছে বিরাগভাজন। সময় মত বৃষ্টি না হওয়া, আবার অতিবৃষ্টি, কালো মেঘের বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা এতো বেশি যা ভাবিয়ে তুলছে। এ অবস্থায় তাল গাছ রোপণ, হেফাজত ও রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ প্রয়োজন।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, এ গাছ অল্প সময়ের মধ্যে বিক্রি করে অনেক টাকা পাওয়া যায় না এবং এ গাছের সকল অংশই মানুষের উপকারে আসে। এ গাছ রোপন করলে তাতে বেশী জমি দখল করে না তাই জমিও নষ্ট হয় না। কোনো সার-ওষুধ ব্যবহার করতে হয় না। কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। রোপণ করার ১০ থেকে ১৫ বছর পরে তাল গাছে ফল ধরে। এ গাছ খুব শক্ত-পোক্ত হওয়ায় ঝড় বন্নায় ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকেনা। তবে কৃষকরা দাবি করেন, এ বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা এবং তদারকি থাকলে হয়তো গাছগুলো একটু বেশি করে রোপণ করা হতো।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি উপ পরিচালক মো.বেলাল হোসেন খান অফিস সূত্রে জানান, এ গাছ রোপণের ব্যাপারে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করি এবং তারা রোপণও করে। কিন্তু আগের তুলনায় একটু কম। তারা আরও বলেন এ বিষয়ে আমাদের অর্থ বরাদ্ধ বা কোনো প্রজেক্ট নেই।

খোলাডাক/ এমএন



কমলনগরে বহিরাগত যুবক দিয়ে অস্ত্রোপচার, স্বামী-সন্তান নিয়ে আড্ডায় মগ্ন ডা. ফাতেমাতুজ যাহরা
বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না-এমপি নজরুল ইসলাম বাবু
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদের মোশারেফ
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে দু’জনের মনোনয়ন বাতিল
কমলনগরে ডেঙ্গু জ্বর মানে-ই হঠাৎ আতংক
লক্ষ্মীপুরে তৃণমুলে আলোচনায় যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ভুলু
কমলনগরে বিএনপি’র অফিস ভাঙচুর
কমলনগরে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা, বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ র্যালী
জামালপুরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আ’লীগে মতবিনিময় সভা
জামালপুরে যুবলীগের তারুণ্যর জয়যাত্রা সমাবেশের প্রস্তুতি সভা
সরিষাবাড়ীতে জনতার সাথে মতবিনিময় করেন প্রকৌশলী মাহবুব হেলাল
ঈদের শুভেচ্ছা জানান ভাইস চেয়ারম্যান শিলা
ঈদের শুভেচ্ছায় আ’লীগ নেতা সাজু
“ডেইলি ভোরের বাণী” পরিবারে ঈদুল আজহা’র শুভেচ্ছা
কমলনগরে স্মার্ট ভূমিসেবায় চালু হয়েছে গ্রাহক সেবা