বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » কমলনগরে সংকেত দিয়ে টাকা হাতাচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রার আরমান
কমলনগরে সংকেত দিয়ে টাকা হাতাচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রার আরমান
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ভূমি দলিল সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরমান এর বিরুদ্ধে নতুন দলিলে বিভিন্ন খুটিনাটি ভুল ধরে সংকেত ব্যবহার করে দলিল লিখকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
সূত্রে জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করতে লেখকরা গেলে দলিল এবং খতিয়ানের নামের শব্দগত ভুল ধরে। দলিল পরে হবে রেখে দেয় অথবা তার নিজের কাছে থাকা নোটে বিভিন্ন সংকেত দিয়ে রেজিস্ট্রি করে দেয়। তার সংকেতগুলো দলিলের ধরণ বুঝে মোটা অংকের হয়। সংকেত এ, বি, সি, ডি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত থাকে। দলিল রেজিস্ট্রি শেষ হলে সংকেত মতে মোটা অংকের টাকা দিতে হয় তাকে। চাহিদা মতো টাকা না দিলে লেখকের পরবর্তী নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করতে চায় না।
উপজেলায় প্রতি সপ্তাহে দু’দিন নতুন দলিল রেজিস্ট্রি হয়। দু’দিনে প্রায় ৫০-৬০টা নতুন দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে তিনি দু’দিনের যত দলিল হয় সেগুলো দেখে দেখে মূল্য বিবেচনায় সংকেত দিয়ে রাখে প্রায় ২০-২৫ টা। প্রতিটি সংকেত দেয়া দলিল থেকে তাকে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলিল লিখক জানান, সাব-রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আরমান খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। সে নতুন দলিলগুলোর নামজারি থেকে শুরু করে ভায়া দলিলের খুটিনাটি শব্দগত ভুল ধরে সংকেত দিয়ে দেয়। পরে অফিস শেষ করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন তিনি। তাকে চাহিদা মতো টাকা না দিলে পরবর্তীতে নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করতে চায় না। তিনি রীতিমত টাকার জন্য বাজে আচারণ করে থাকে। তার কাছে দলিল লিখকরা জিম্মি থাকে। তাই তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না।
আরও জানান, গত সোমবার(৩০নভেম্বর) বিকেলে হঠাৎ দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.খোরশেদ আলম রতন এর সাথে সাব-রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আরমান এর সাথে মুখামুখি খারাপ হট্টগোল আচারণ করতে দেখা যায়। হট্টগোল হওয়ার পর থেকে নতুন দলিল রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে।
দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আরমান খুব খারাপ মানুষ। তিনি নতুন দলিলে নানাবিধ ভুল ধরে সংকেত দিয়ে টাকা আদায় করেন। তিনি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কেন্দ্রিক প্রায় কর্মচারী ও দলিল লিখকদের সাথে উচ্চ বাক্য খারাপ আচারণ করে। তিনি প্রায় দলিলে ভুল ধরে টাকা নেয়। কিন্তু কত টাকা তাকে দেয়া যায়..? এমন প্রশ্ন করেন তিনি…। তার চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে। খতিয়ান অথবা দলিল শব্দগত ভুল হতে পারে। তবে এগুলো রাস্ট্রীয় ভাবে নামের সংশোধনী ভুল। দেখা যায়, এক ব্যক্তির নামের পাশে শব্দগত ভুল অথবা নামের প্রথম এবং শেষ অংশ নেই। এটা কোন ভুল নয়। অথচ তিনি এসব ভুল ধরে সংকেত দিয়ে লেখকদের কাছ থেকে টাকা হাতাচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে তার সাথে মুখোমুখি আচারণগত হট্টগোল হয়।
সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরমান বলেন, কাগজিক সমস্যা এবং প্রতিটি কাগজের মুল কপি ছাড়া নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করা যায় না। দলিল লিখকদের মুল কপি জমা দিতে একাধিক বার বলা হয়েছে। দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম রতন এর সাথে নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করতে তাগজের মুল কপি চাওয়া হয়। তিনি মুল কপি দেখা পারে নি। পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক উচ্চ-বাক্য স্বরে খারাপ আচারণ করেন। দলিল লিখক সমিতি নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করতে না বলে হুমকি দেন। এছাড়াও তারা যে বলেছে সংকেত দিয়ে টাকা নেয়া হয়। সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যাে-বানোয়াট বলেছে। দলিল লিখক সমিতির বাজে আচারণের ব্যাপারে উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
ভী-বাণী /আমু